ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আবরার হত্যায় ২২ জন অংশ নেন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২৭, ৯ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আবরার হত্যায় ২২ জন অংশ নেন

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত‌্যাকাণ্ডে ২২ জন অংশ নেন। তাদের সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

অভিযুক্তদের মধ‌্যে কেউ হকিস্টিক দিয়ে আবরারকে পিটিয়েছেন, কেউ মুখ চেপে ধরেছেন। এ কারণে আবরারের চিৎকার বাইরে থেকে শোনা যায়নি।

গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রোববার রাতে আবরার তার কক্ষে বসে পড়ছিলেন। তাকে ডেকে নেয়া হয় শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে। প্রথমে বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবরারের হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং ফেসবুকে তার স্ট্যাটাস দেখিয়ে চড়-থাপ্পর মারা শুরু করেন। এর পরেই আবরারের ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়। সাধারণ সম্পাদক রাসেলসহ অন্যদের মধ‌্যে কেউ আবরারের পা চেপে ধরেন, কেউ লাঠি দিয়ে পেটান, কেউবা কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগকর্মী মনির ও রাফাত তার মুখ চেপে ধরেন। এ কারণে আবরার চিৎকার করতে পারেননি। তাকে কান্না করতেও দেয়া হয়নি। একপর্যায়ে আবরার অচেতন হয়ে পড়েন।

মামলাটি তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুবুর রহমান বুধবার দুপুরে রাইজিংবিডিকে বলেন, আমরা এ ঘটনার তদন্তে জানতে পেরেছি, শুধু এজাহারভুক্ত আসামি নন, অন্যরাও এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যারা বিভিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের ব্যাপারে আরো নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হবে।

আবরারের এক সহপাঠী রাইজিংবিডিকে বলেন, আবরার অত্যন্ত মেধাবী ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো সঙ্গে তেমন ঘোরাফেরা করত না। পড়াশোনা নিয়েই সব সময় ব্যস্ত থাকত। ঘটনার দিন রাতে কক্ষে বসে ছিলাম। আবরারকে যখন ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন মনে হয়েছিল যে, বড় ভাইরা শাসন করে তাকে ছেড়ে দেবে। এরপর অনিক আবরারের রুমে আসে। সে আবরারের জামা-কাপড় নিয়ে যায়। এ সময় তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, আবরারের অবস্থা কী? সে কোথায়? তখন অনিক বলে, আবরার ভালো আছে। আমরাও এ কারণে বাইরে এসে তার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেইনি। আবার ভয়ও ছিল- এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদেরকেও মারতে পারে। এ কারণে আমরা অনেকে রুমের বাইরে আসতে পারিনি। আবরারের চিৎকারও শুনতে পাইনি।

আবরারের বাবা ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তারা সবাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া, আরো কয়েকজন হত‌্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যারা হত্যার সময় বিভিন্ন ভূমিকা পালন করেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।

উল্লেখ্য, রোববার দিবাগত রাতে আবরারকে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ