ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অমিত সাহা ফের রিমান্ডে, তোহা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অমিত সাহা ফের রিমান্ডে, তোহা কারাগারে

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহার ফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আরেক আসামি  হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সাঈদ শুনানি শেষে এসব আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে দুই আসামিকে আদালতে হাজির করেন। অমিত সাহার ফের সাত দিনের রিমান্ড এবং তোহাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, অমিত সাহা ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। অন্য আসামিরা যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সেখানে তার নাম এসেছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অন্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য এ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করা প্রয়োজন।

অমিত সাহার পক্ষে মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। তিনি বলেন, অমিত সাহা সম্পূর্ণ নির্দোষ। এজাহারে তার নাম নেই, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না। পূজার ছুটিতে সে বাড়িতে ছিল। শুধু নামের কারণে এবং ফেসবুকে কিছু বন্ধুর উস্কানির জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্দেহজনকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন, ঘটনাস্থলে অমিত সাহা উপস্থিত ছিল না। এটা প্রি-প্ল্যানড মার্ডার ছিল না। তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রিমান্ডের কোনো অগ্রগতি নেই। আর কোন কোন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার নাম বলেছে উল্লেখ করা হয়নি। অমিত সাহার রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন প্রার্থনা করছি।

রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশের জিআরও এসআই মাজহারুল ইসলাম বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দফায় দফায় তাকে মারধর করা হয়েছে। অমিত সাহার নির্দেশে, প্রত্যক্ষ মদদে এ ঘটনা ঘটেছে তথ্য পাওয়া গেছে। পুনরায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো তথ্য পাওয়া যাবে।

তোহা ঘটনার সাথে জড়িত নন, জানিয়ে তার জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট আইয়ুব হোসেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অমিত সাহার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর তোহাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শুনানিকালে অমিত সাহাকে আদালতে ওঠানো হয়। তবে তোহাকে আদালতে ওঠানো হয়নি।

গত ১১ অক্টোবর এ আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ১০ অক্টোবর রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে অমিত সাহাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আবরারকে শেরেবাংলা হলের যে কক্ষে পিটিয়ে হত্যা করা হয় সেই কক্ষে (২০১১) থাকতেন অমিত সাহা। সেদিন আবরারকে ওই কক্ষে ডেকে নেয়ার আগে অমিত ম‌্যাসেঞ্জারে আবরারের খোঁজ করেন তার এক সহপাঠীর কাছে, যার স্ক্রিনশট পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে গাজীপুরের মাওনা থেকে তোহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তোহা যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। শেরেবাংলা হলের ২১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরার ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন বেদম পেটায়।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যায় চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। আবরার বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

 

ঢাকা/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়