ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিবে মিনি ফগার মেশিন

খালেদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০১, ২ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিবে মিনি ফগার মেশিন

খালেদ সাইফুল্লাহ : দেশে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ডেঙ্গু আতঙ্কে দিন পার করছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৮ বছরের মধ্যে এবারই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও আগের বছরগুলোর তুলনায় বেড়েছে। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের এই সংখ্যার অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা শহরের। যদিও রাজধানীর বাইরের জেলা শহরগুলোতেও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ডেঙ্গু মশাবাহিত রোগ। এই রোগের জীবাণু বহন করে এডিস মশা। স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়।আক্রান্ত হওয়ার শুরুর দিকে কাপুনি দিয়ে জ্বর আসে। এরপর ধীরে ধীরে রক্তের অনুচক্রিকা কমতে থাকে। অনুচক্রিকা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার ফলে মানুষের মৃত্যুও ঘটতে পারে। এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। মশা নিধন এবং এর বংশবিস্তার রোধে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ফগার মেশিনের মাধ্যমে বিশেষ ওষুধ প্রয়োগ করে। কিন্তু এতেও কোনোভাবেই এডিস মশার প্রকোপ কমছে না। ফলে সিটি কর্পোরেশনের প্রতি মানুষের ক্ষোভ স্পষ্টতই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ডেঙ্গু ও দুই সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম। কিন্তু শুধু সিটি কর্পোরেশনের উপর নির্ভর করে ঘরে বসে থেকে সমালোচনার বুলি না আউড়িয়ে এডিস মশা প্রতিরোধে আপনিও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন। কারণ, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে এর দায় সিটি কর্পোরেশনের উপর বর্তালেও ভোগান্তি একান্তই আপনার এবং আপনার পরিবারের।

শুরুতেই মাথায় রাখতে হবে মশা যেন কোনোভাবেই বংশবিস্তারের সুযোগ না পায়। কারণ, ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয়।’ তাই মশার বংশবিস্তার রোধে বাড়ির আশেপাশে কোথাও পানি জমে থাকছে কিনা খেয়াল করুন। পানি জমতে পারে এমন কিছু থাকলে সেগুলো অপসারণ করুন। খাবারের উচ্ছিষ্ট, ময়লা-আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেললে তাতে পানি জমে এডিস মশা বংশবিস্তার করতে পারে। এছাড়া ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বাড়ির আশেপাশে যেন কোনোভাবেই স্যাঁতসেতে পরিবেশ না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি। মশা তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতি- যেমন মশার কয়েল, অ্যারোসল স্প্রে প্রভৃতি থাকলেও বর্তমানের এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সেগুলো বিশেষ কাজে দিচ্ছে না। তাই মশা দমনে সিটি কর্পোরেশনের অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজেই ফগার মেশিনের মাধ্যমে বাড়ি এবং আশেপাশের মশা নিধন করতে পারেন খুব সহজেই। সিটি কর্পোরেশনের ফগার মেশিনগুলো বেশ বড় এবং দামী হলেও বাড়িতে ব্যবহারের জন্য অল্প দামে ছোট আকারের ফগার মেশিন পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।

‘মেশিন এন্ড টুলস বিডি’ নামে ঢাকার একটি অনলাইন শপে পাওয়া যাচ্ছে মিনি ফগার মেশিন। পাওয়া যাচ্ছে সহজে ব্যবহারযোগ্য দুটি মডেলের মেশিন। ‘সুপার-২০০০ গোল্ড’ মডেলের দাম ১২ হাজার ৫শ টাকা এবং ‘কেবি-৯০’ মডেলের মেশিনের দাম ১৫ হাজার টাকা। মেশিন দুটি কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত বলে জানান প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী মুরাদ খান।

মিনি ফগার-এর ব্যবহারবিধি সহজ। এর পেছনের অংশে রয়েছে ছোট আকৃতির গ্যাস সিলিন্ডার। পোর্ট্যাবল সান গ্যাস নামের এই গ্যাসের ১লিটার সিলিন্ডারের দাম ২০০টাকা। এটি একটানা ১৪-১৫ ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। ফগারের নিচের অংশে রয়েছে অ্যারোসল ট্যাঙ্ক। অ্যারোসল ট্যাংকে মশা মারার ‘মসকিউটো অ্যারোসল’ প্রয়োজন হয়। ১লিটার মসকিউটো অ্যারোসলের দাম ২৫০ টাকা। প্রতি লিটার অ্যারোসল ব্যবহার করা যাবে টানা ১০ ঘণ্টা। ফগারের উপরের অংশে হাতলের নিচে বাটনে চাপ দিলে গ্যাস এবং অ্যারোসলের মিশ্রণ এর সামনের অংশ দিয়ে বের হবে। আকারে ছোট হওয়ায় এটি বহনযোগ্য এবং যে কেউ ব্যবহার করতে পারে। তবে ব্যহারের সময় যেন কোনোভাবেই ওষুধ শ্বাস-প্রশ্বাস কিংবা মুখ দিয়ে পেটে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

নাসির উদ্দীন নামে একজন ব্যবহারকারী বলেন, ‘একটি নির্মাণাধীন ভবন এবং এর আশেপাশে মিনি ফগার মেশিন ব্যবহার করেছি। ভালো সুফল পেয়েছি। এর ব্যবহার খুবই সহজ। নিজ বাড়ির জন্য এটি যে কেউ ব্যবহার করতে পারে। মেশিনটি খুবই ভালো সার্ভিস দিচ্ছে। মশা থেকে শুরু করে তেলাপোকা সব মরে যাচ্ছে।’ এই মেশিনটি সংগ্রহ করা যাবে মেশিন এন্ড টুলস বিডি’র বংশাল অফিস থেকে। এছাড়াও ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার করে সমগ্র বাংলাদেশের যেকোন স্থান থেকেই মেশিনটি সংগ্রহ করা যাবে। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ-এ গিয়ে অর্ডার করতে হবে। 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ আগস্ট ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়