পানি রপ্তানি করবে বাংলাদেশ
ডেল্টা প্লান (বদ্বীপ পরিকল্পনা) বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ পানি রপ্তানি করবে বলে জানালেন পরিকল্পনা কমিশনের অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম।
রোববার ঢাকার বিআইআইএসএস ভবনে ঢাকা মেগাসিটির উষ্ণায়ণ প্রশমন কৌশল: টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োগ’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন ডা. আলম।
তিনি বলেন, ‘ডেল্টা প্লানের মত এমন পরিকল্পনা ভারত, মিয়ানমারসহ পার্শ্ববর্তী কোন দেশ হাতে নেয়নি, যা আমরা নিয়েছি। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। পানির উৎস এখানে অফুরন্ত। আমরা এর যথাযথ ব্যবহার করবো।’
আস্ট্রেলিয়ার কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্ট্রেটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে। আমরা ছাদকৃষির কথা বলছি। এটা নিয়ে ভালোভাবে গবেষণার প্রয়োজন আছে। কারণ ছাদকৃষিতে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার হচ্ছে। এমনিতেই প্রতিবছর ভূগর্ভস্থ পানির স্থর নিচে নেমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ছাদকৃষির জন্য বৃষ্টির পানি ধরে রেখে সেটা ব্যবহার করা যেতে পারে। ’
সারা দেশে ভূগর্ভস্থ পানির ম্যাপিংয়ের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন শামসুল আলম।
সভাপতির বক্তব্যে সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গুজরাটে বাড়িতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা বাধ্যতামূলক। এমন আমাদের রাজধানিতেও তেমন হওয়া উচিৎ। ’
‘মিটিগেশন স্ট্রেটেজিক স্টাডিজ ফর আরবান মাইক্রো ক্লাইমেট অব ঢাকা মেগাসিটি টু রিডিউস অ্যাডভার্স ক্রাইমেট চেঞ্জ ইম্পেক্ট’ বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সের অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ান এবং বিআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এম. ফজলুল করিম, কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইকনোমিক্স, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রোপার্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল সলিম। প্যানেল ডিসকাশনের সভাপতিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ডেভেলমেন্টের পরিচালক ড. সলিমুল হক।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরের তাপমাত্রা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা নগরিক জীবন এবং বাস্তুসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন রোগ –জীবাণুর টিকে থাকার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এ ছাড়া এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা মানুষের শরীর এবং মনোজগতে নেইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধনের জন্য বেশ বিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড যথায়থভাবে অনুসরণ এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যথেষ্ট পরিমান জলাশয় নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষিত রেখে উন্নয়নে কী কী করা হবে, তা নিয়েই ডেল্টা প্ল্যান বা বদ্বীপ পরিকল্পনা নেয়া হয়। এই পরিকল্পনায় বন্যা, নদীভাঙন, নদী শাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা/হাসিবুল/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন