লকডাউনে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে চলছে অটোমেশন ক্লাস
কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আজ গোটা বিশ্ব সংকটাপন্ন। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে নেই কোনো গতি, নেই কোনো তৎপরতা। সবকিছুতেই স্থবিরতা ও অসারতা। থমকে গেছে শিক্ষা কার্যক্রমও। তবে অনলাইনভিত্তিক অটোমেশন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষাকার্যক্রম চালু রেখে উদারহণ সৃষ্টি করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, করোনায় বৈশ্বিক সংকটের ভয়ানক প্রভাব পড়ছে আমাদের সোনার বাংলাদেশে। সামাজিক দূরত্ব অবলম্বন নীতি ও হোম কোয়ারেন্টাইন বিধিতে আমাদের দেশ আজ কর্মহীনতা ও উৎপাদনহীনতায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে। দেশের অর্থনীতিতে তো প্রভাব পড়েছেই, সব থেকে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ও স্কুলিং প্রদ্ধতিতে। যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বছরের পর বছর পেরিয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের ব্যবস্থাপনায় ইতোমধ্যে প্রশংসনীয় কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, যেমন; শিক্ষা বাতায়ন ও সংসদ টিভির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করা। কিন্তু, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলির অবস্থা বেশ নাজুক। তাদের শিক্ষা প্রদানের ইচ্ছা থাকলেও পর্যাপ্ত প্রযুক্তি ব্যবস্থা না থাকায় তাদের কর্তৃপক্ষ অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন।
এ দিক থেকে ঢাকার কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিকভাবে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষাদানের জন্য পরিচিত প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল এক্ষেত্রে সফলতার সাক্ষর রেখে চলেছে। অটোমেশন ক্লাসের মাধ্যমে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ধানমণ্ডি, সোবহানবাগ ও উত্তরা শাখাতে চলছে শিক্ষা প্রদানের সফল বাস্তবায়ন। ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংলিশ ভার্সনের সকল শাখাতে কাঠামোবদ্ধ শিক্ষাপদ্ধতির মতই এ প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনলাইন বা অটোমেটেড শিক্ষা ধারা রয়েছে অব্যাহত। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষা মডিউল SaaS এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ভিত্তিক শ্রেণি পাঠদানসহ গুগল ক্লাসরুম, গুগল মিট-এর মাধ্যমে লাইভ শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল ডক্টর মো. মাহমুদুল হাছানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সোস্যাল ডিস্টান্সিং বিধি কার্যকর করার আগে থেকেই তারা অনলাইনে শিক্ষা দানের বিষয়ে প্রস্তুত ছিলাম এবং যথারীতি ক্লাস রুটিন তৈরি করে নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। শ্রেণিভিত্তিক মেসেঞ্জার, হোয়াটসআপ ও নিজস্ব মডিউলের মাধ্যমে গ্রুপ করে নিয়মিত শিক্ষাদান অব্যাহত রাখার কাজ শুরু করেছি।’
ই-লার্নিং পদ্ধতি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের একটি অনন্য সাধারণ শিক্ষা পদ্ধতি যার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা কোনো দিন অনুপস্থিত থাকলেও তাদের নিজস্ব আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে নিজস্ব সময়ে পড়া গ্রহণ করতে পারে।
কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা দেশের আপদকালীন এ সময়ে অত্র স্কুলের গৃহীত অনলাইন শিক্ষাধারার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ ধারাকে অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘করোনাকালে স্কুল বন্ধ হওয়ার সংবাদ শুনে হতাশ হলেও কর্তৃপক্ষের গৃহীত অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু হওয়ায় তারা খুবই সন্তুষ্ট। অনলাইনে ক্লাস গ্রহণ, হোমওয়ার্ক করা, নিয়মিত ক্লাস টেষ্ট দেওয়া এমনকি সাথে সাথে শিক্ষকদের ফিডব্যাক দেওয়া সবকিছুই তাদের ভীষণ ব্যস্ত রেখেছে এবং তারা বুঝতেই পারছে না যে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে আছে।’
প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এর সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান, শিক্ষকদের তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান ও প্রয়োগ, তাদের ডেডিকেশন, গার্ডিয়ানদের সহযোগিতা, শিক্ষার্থীদের মনোযোগ এবং সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি সরঞ্জামের প্রাচুর্যতা আমাদের অনলাইন কার্যক্রমকে সাফল্যমন্ডিত করেছে।’
সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি একই ধারায় অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখে তাহলে করোনা কালের এ সংকটময় মুহূর্তে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মানসিক দুরবস্থা থেকে রেহাই পাওয়া খুব সহজ হবে। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে।
ঢাকা/হাসান/জেনিস
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন