‘ক্রেস্টের এমডির শত কোটি টাকা আত্মসাতের টার্গেট ছিল’

গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শহীদুল্লাহর তার প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে থাকা গ্রাহকদের শেয়ার কেনাবেচার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের টার্গেট ছিল।

সোমবার (০৬ জুলাই) শহীদুল্লাহ ও তার স্ত্রী নিপা সুলতানাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা।

মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) এবিষয়ে ডিবি কার্যালয়ের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন।

তিনি বলেন, ‘এমডি ও তার স্ত্রী গত ২২ জুন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ স্টক ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ করে চলে যায়।  প্রতিষ্ঠানে আনুমানিক ২২ হাজার বিও অ্যাকাউন্টধারীর শেয়ার কেনাবেচার ১০০ কোটি টাকা ছিল।  শহীদুল্লাহ ২২ জুন তার প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে শিফট করে প্রতারিত করার জন্য সরিয়ে নিয়েছেন। বিনিয়োগকারীরা যখন দেখলো যে অ্যাকাউন্টে টাকা নেই, তখন তারা অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন।  তারা দেখেন অফিস তালা ও শহীদুল্লাহ, তার স্ত্রী এবং ভাই পালিয়ে গেছেন।’

শহীদুল্লাহকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে আবদুল বাতেন জানান,  ‘তিনি (শহীদুল্লাহ) স্বীকার করেছেন যে আত্মসাতের জন্যই টাকা তুলে পালিয়েছিলেন। এছাড়াও আরেকটি অবৈধ কাজ করেছেন তারা। নিয়ম অনুযায়ী তারা শুধুমাত্র এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্ট খুলে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। তবে তারা প্রায় ৬০০ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর নিয়ে ডিডের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা নিয়ে তাদের মাসে মাসে লভ্যাংশ দিচ্ছেন, যা আইনত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ’

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ২২ হাজার বিও অ্যাকাউন্টধারীর প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ ও তার মধ্যে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় ডিবি। এঘটনায় পল্টন থানায় ২টি মামলা রুজু হয়েছে।

এর আগে গত ২৩ জুন বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দেওয়ার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ক্রেস্টের বিনিয়োগকারীরা। তারা প্রতিষ্ঠানটির বাইরে বিক্ষোভ করেন।  এ ঘটনায় ২৪ জুন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) দুই প্রতিনিধিসহ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এছাড়া হাউজটির মালিকরা যেনো বিদেশে যেতে না পারেন, সে লক্ষ্যে ডিএসই থেকে পল্টন থানায় অভিযোগ করা হয়। একইসঙ্গে মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করে। এখন তাদের ১০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের (রমনা বিভাগ) উপ-কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক, জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাদিয়া আফরোজসহ পুলিশের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

* ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের এমডি শহীদ উল্লাহ স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার

 

ঢাকা/নূর/জেডআর