ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কাউন্সিলে নিষেধাজ্ঞা: তবুও কমেনি উৎসবের আমেজ

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কাউন্সিলে নিষেধাজ্ঞা: তবুও কমেনি উৎসবের আমেজ

আরিফ সাওন: ছাত্রদলের কাউন্সিলে আদালত নিষেধাজ্ঞা দিলেও কমেনি নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ।

১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার দুই দিন আগে ১২ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের সাবেক সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানের মামলায় আদালত কাউন্সিলে নিষেধাজ্ঞা দেন।

জেলা থেকে আসা নেতারা বলেন, যেহেতু ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিলো। তাই ১২ সেপ্টেম্বর তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কেউ কেউ ১২ সেপ্টেম্বর সকালে রওনা দিয়ে বিকেলের মধ্যে ঢাকায় পৌছে যান।

আবার কেউ কেউ বিকালে রওনা দেন। স্থগিতাদেশের খবরটি জানাজানি হয় ১২ সেপ্টেম্বর রাত আটটার দিকে। তখন অনেকেই গাড়িতে ঢাকার পথে। আবার কারো কারো গাড়ির টিকিট রাতে আরো পরে ছিলো। যারা গাড়িতে ছিলেন, আর যারা ততক্ষণে গাড়িতে উঠেননি আদালতের নিষেধাজ্ঞা শুনেও এদের মধ্যে কেউই যাত্রা স্থগিত করেন নি।

তবে খবরটা শোনার সাথে সাথে সাময়িক একটু ধাক্কা খেয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকায় পৌছে সকালে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে মিলিত হয়ে উভয়েই অনেকটা চাঙ্গা হয়েছেন।

জেলা থেকে আসা নেতাদের মধ্যে কেউ উঠেছেন স্বজনের বাসায়, কেউ প্রার্থী কিংবা শুভাকাঙ্ক্ষীর বাসায়। তবে যে যেখানেই ওঠেন না কেন সবার সাথেই যোগাযোগ রেখেছেন প্রার্থী কিংবা প্রার্থীদের সমর্থিত নেতাকর্মীরা।

তারা জেলার নেতাদের সাথে কথা বলে সুবিধা মতো কোন স্থানে চায়ের আড্ডা, লাঞ্চ বা ডিনারে মিলিত হয়েছেন।

এর আগে কেন্দ্রীয় নেতারা যখন বিভিন্ন জেলায় গিয়েছিলেন তখন জেলার নেতারা তাদের সাধ্যমত কেন্দ্রীয় নেতাদের অতিথি আপ্যায়ন করেছেন। এখন জেলার নেতারা কেন্দ্রে আসায় কেন্দ্রীয় নেতারাও সাধ্যমত জেলার নেতাদের অতিথি আপ্যায়ন করছেন। ফলে উভয়ের মধ্যে হৃদ্রতা বাড়ছে। গড়ছে আত্মার বন্ধন।

কোথাও কোথাও দেখা গেছে জেলা ও কেন্দ্রের নেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি হোটেলে গিয়ে দেখা গেছে জেলা থেকে আসা ও কেন্দ্রের নেতাদের উপস্থিতিতে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। একে অপরের সাথে এই আনন্দঘন মুহূর্ত ধরে রাখার জন্য সেলফি তুলছেন। তারা বলছেন, এটা দলের জন্য খুবই ইতিবাচক। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে থাকার অঙ্গীকারও করছেন তারা।

একটি সূত্র জানিয়েছেন, তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে ছিল কেন্দ্র এবং তৃণমূলের সাথে হৃদ্যতার সম্পর্ক বা আত্মার বন্ধন স্থাপন করা । আর সে কারণেই তিনি তৃণমূলের ভোটে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেন। সাময়িকভাবে কাউন্সিল স্থগিত হলেও আত্মার বন্ধন গড়ার ক্ষেত্রে তা বাঁধা হতে পারেনি।

তাছাড়া স্থগিতাদেশ পাওয়ার পর বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সাময়িক এই সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এতে সংগঠনের গতিশীলতা আরো বেড়েছে।

সভাপতি প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। সরকার ভেবেছিল কাউন্সিলে বাঁধা সৃষ্টি করলে আমাদের আনন্দঘন পরিবেশ ব্যাহত হবে। কিন্তু আমাদের আনন্দঘন পরিবেশ ব্যাহত করতে পারেনি।

তিনি বলেন, আপনারা হয়ত লক্ষ্য করেছেন, আজ কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেতাকর্মীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল । জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারা চায়ের আড্ডায় বসেছেন, হাসি ঠাট্টা করেছেন। স্থগিতের ঘটনায় প্রার্থী বা ভোটার কেউই হতাশ নয়, সবাই উজ্জ্বীবিত । আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে সরকারের বাঁধা কিভাবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মোকাবেলা করতে হবে,কিভাবে এসরকারের পতন ঘটিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও গনতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে সেসব বিষয়ে জেলা ও কেন্দ্রের নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

সভাপতি প্রার্থী হাফিজুর রহমান বলেন,জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে জনগনের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ আদালতের কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না।

তিনি বলেন, স্থগিতাদেশ উৎসবের আমেজ একটুও কমেনি। ছাত্রদলের বিরুদ্ধে কোন শক্তিই শেষ লড়াই এ জিততে পারিনি।এবারও পারবে না। আমাদের কাউন্সিল হবে এবং সম্মানিত কাউন্সিলরগনের ভোটেই নির্বাচিত হবে আগামীর নেতৃত্ব। যাদের হাত ধরেই দেশনেত্রীর মুক্তি ও তারেক রহমানে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আন্দোলনে জোরদার হবে।

উল্লেখ্য, সারাদেশের ছাত্র দলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলেরর ভোটে আজ ছাত্রদলে শীর্ষ দুই পদে নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা ছিলো।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯/সাওন/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়