ছাত্রদলের কাউন্সিল: দুই একদিনের মধ্যেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত
আরিফ সাওন: ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার দায়ের করা মামলার কারণে নির্ধারিত দিনে কাউন্সিল হতে পারেনি।
তবে ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিল অনুষ্ঠিত না হলেও আগামী দুই একদিনের মধ্যে আসছে কাউন্সিল গঠনের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, যেহেতু ছাত্রদলের সাবেক সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান একটি মামলা করেছেন। সেকারণে একটু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিলো।তখন তাৎক্ষনিক বুঝে ওঠা সম্ভব হয়ে ওঠে নি। সেকারণে নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়।
সূত্রটি বলেছে, তারা এই সাময়িক সংকট কাটিয়ে ওঠার পথ পেয়েছেন। তাই আগামী দুই একদিনের মধ্যে ছাত্রদলের কাউন্সিলের ব্যাপারে একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।
সূত্রটি আরো জানায়, আদালত যেসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে সেসব বিষয়ে বিএনপির আইনজীবীরা আদালতে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করবেন। আর ছাত্রদলের কাউন্সিল; এটা ছাত্রদলের বিষয়, এবিষয়ে ছাত্রদলই সিদ্ধান্ত নেবে।
জানা যায়, দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে পোক্ত করতে দীর্ঘ ২৭ বছর পর এ কাউন্সিলকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
কাউন্সিল অনুষ্ঠিতের সব প্রস্তুতি তখন প্রায় শেষ। সারা দেশের ছাত্রদলের ১১৭ সাংগঠনিক ইউনিটের নেতাকর্মীরা প্রায় সবাই এসে ঢাকায় যখন মিলিত হন বা হচ্ছিলেন- এসময় ১২ সেপ্টেম্বর মামলার খবর পেয়ে কিছুটা ধাক্কা খান।
আদালতের নোটিশ পেয়ে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও হতবাক হয়ে যান। অপ্রত্যাশিত এ সংকট উত্তোরণে তারা দফায় দফায় বৈঠক করেন। তারা সরকারের কারসাজিকে দায়ি করেন। তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী আদালত কোনো ভাবেই রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলে এভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
মামলার পরে অনেকেই মনে করেছেন, কাউন্সিল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সহজে আর কাউন্সিল হবে না। আদালতের দীর্ঘ সূত্রিতায় কাউন্সিল হতেও দেরি হবে।তবে এই সূত্রটি বলছে দেরি হবে না।
দেরি হতে পারে মনে করে ভোটারদের মধ্যে কেউ কেউ আজ সন্ধ্যার নিজ নিজ জেলায় ফিরে গেছেন। আবার অনেকেই রাজধানীতে রয়ে গেছেন। তবে যারা চলে গেছেন তারা বলছেন, আবার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে তাদের আসতে তো সময় লাগবে না।
দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি পদে ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। কাউন্সিলে প্রার্থী ও ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা আছে। এখন শুধু ভোট গ্রহণই বাকি।ফলে এটা সম্পন্ন করতে তেমন কোনো অসুবিধা হবে না।
ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মামলার বিষয়ে আইনজীবীরা আদালতে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করবেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করে বিএনপির হাইকমান্ড। গঠন করা হয় তিনটি কমিটি।
এর মধ্যে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি এবং শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করা হয়।
এসব কমিটি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই শেষে আপিল কমিটির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা শেষে প্রার্থীদের প্রচারণাও গত বৃহস্পতিবার শেষ করা হয়।
এদিনই বিলুপ্ত কমিটির সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান ঢাকা জেলা জজ কোর্টের ৪ নম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেন। তার দায়ের করা মামলায় আদালত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের ১০ জনকে সাত দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যাপারে কারণ দর্শাতে বলেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯/সাওন/নাসিম
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন