ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

করোনাভাইরাস দূর করতে যেভাবে নাক পরিষ্কার করবেন

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২৪ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনাভাইরাস দূর করতে যেভাবে নাক পরিষ্কার করবেন

এখনো পর্যন্ত কোভিড-১৯ সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, যদিও আমরা সম্ভবত এর কাছাকাছি চলে এসেছি। ইতোমধ্যে ভাইরাসটিতে সাতাশ লক্ষাধিক মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন ও প্রায় দুই লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সংক্রমণটির চিকিৎসায় আমেরিকার মতো দেশও ইতোমধ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দেশটি করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল না হলেও সেখানে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন, প্রায় ৫০ হাজার। কিন্তু আটলান্টার চিকিৎসক অ্যামি বাক্সটার কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছেন। দীর্ঘস্থায়ী মেডিক্যাল চ্যালেঞ্জের সৃজনশীল সমাধানের জন্য পরিচিত এ চিকিৎসক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, নাক পরিষ্কার করে কোভিড-১৯ এর অগ্রগতি ঠেকিয়ে দেয়া সম্ভব হতে পারে।

এ বিষয়ে ডা. বাক্সটার উল্লেখযোগ্য গবেষণা করেছেন এবং নাক-কান-গলা ও ফুসফুস চিকিৎসার ওপর ফোকাস দিয়েছেন এমন সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, কোভিড-১৯ এর উপসর্গ ও সংক্রমণতার অগ্রগতি কমাতে নাক পরিষ্কার প্রধান চিকিৎসা হতে পারে। ডা. বাক্সটার পেইন কেয়ার ল্যাবসের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।

সাইনাস গহ্বর থেকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে নাক পরিষ্কারকে দীর্ঘসময় ধরে কার্যকরী উপায় বিবেচনা করা হচ্ছে। ডা. বাক্সটার বলেন, সাম্প্রতিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, নাক পরিষ্কারে ফ্লু ও ঠান্ডার মতো ভাইরাস রোগের স্থায়িত্ব ও উপসর্গ কমেছে, যদিও কোভিড-১৯ সংক্রমণকে কেন্দ্র করে এ বিষয়ে এখনো গবেষণা হয়নি। কিন্তু কিছু কারণ দেখে আমি খুব আশাবাদী যে, কোভিড-১৯ রোগীদের অসুস্থতার মাত্রা কমাতে বা শোচনীয় অবস্থা প্রতিরোধ করতে এ প্রক্রিয়াটি কার্যকর হতে পারে।

প্রথমত, সাইনাস বা নাক গহ্বরে নতুন করোনাভাইরাসটির ভাইরাল লোড বা ভাইরাসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয়ত, কোভিড-১৯ এর লিঙ্গ ও বয়স বৈষম্যও ডা. বাক্সটারের ধারণাকে সমর্থন করছে। তিনি বলেন, ‘কৈশোরে পদার্পণ না করা পর্যন্ত শিশুদের পূর্ণাঙ্গ সাইনাস গঠিত হয় না। পুরুষদের গহ্বরগুলো নারীদের চেয়ে বড় এবং ৭০ উর্ধ্ব বয়সি মানুষদের গহ্বরগুলো বৃহত্তম। আপনি ইতোমধ্যে শুনেছেন যে শিশুরা কোভিড-১৯ এ কম আক্রান্ত হচ্ছে এবং বয়স্ক ও পুরুষেরা দ্রুত হারে মারা যাচ্ছেন।’

ডা. বাক্সটার আরো উল্লেখ করেছেন যে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে (যেমন- থাইল্যান্ড, লাওস ও ভিয়েতনাম) মোট মৃত্যু খুবই কম। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ মানছি যে তারা মাস্ক পরেন ও হ্যান্ডশেক এড়িয়ে চলেন, কিন্তু ওইসব দেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশ সমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে, সেসব দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নাক পরিষ্কারের চর্চা করেন।’

কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস টেস্টে পজিটিভ রেজাল্ট আসলে ডা. বাক্সটার একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় নাক পরিষ্কার করতে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় উচ্চ লবণ ঘনত্বের তরল দিয়ে নাক পরিষ্কার করুন। প্রতি কাপ বা আট আউন্স পরিমাণ হালকা গরম পানিতে অর্ধ চা-চামচ পভিডন-আয়োডিন, অর্ধ চা-চামচ বেকিং সোডা ও এক চা-চামচ লবণ মিশিয়ে নাক পরিষ্কার করার তরল তৈরি করুন।’ এ স্যালাইন সলুশন দিয়ে সঠিক প্রেসারে নাক পরিষ্কার করতে সাইনাস রিন্সের বোতল ব্যবহার করুন। এ সময় মাথাকে সোজা অবস্থানে রাখতে হবে।

ডা. বাক্সটার বিশ্বাস করেন, এভাবে নাক পরিষ্কার করলে ভাইরাস দূর হয়ে যায় বলে ফুসফুসে ভাইরাস প্রবেশের ঝুঁকি কমে যাবে, মারাত্মক শ্বাসতন্ত্রীয় সমস্যা প্রতিরোধ হবে ও ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কমে যাবে।

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়