ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্য অর্জন হয়নি আইসিবির

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৪, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্য অর্জন হয়নি আইসিবির

কেএমএ হাসনাত : অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ (এপিএ) অনুযায়ী কোনো ক্ষেত্রই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না ‘ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)’।

রাষ্ট্রীয় এ বিনিয়োগকারী সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ অবস্থা উঠে এসেছে। সংস্থাটি এর কারণও প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। তবে আইসিবির কোনো অজুহাত মানতে নারাজ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। দুর্বলতাগুলো দ্রুত কাটিয়ে ওঠার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। 

সূত্র জানায়, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাজ করতে পারছে না রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। গত অর্থবছরে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’র (এপিএ) প্রায় সব সূচকেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তিতে তাদের খেলাপিঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে তারা আদায় করেছে ৯১ কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ১ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ৫ লাখ টাকা।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আইসিবির। এর বিপরীতে গত অর্থবছরে সংস্থাটি বিনিয়োগ করেছে দুই হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে গত জুন শেষে লেনদেনের পরিমাণ হয়েছে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৫০০ জন, ইস্যু ম্যানেজমেন্ট ১০টি ও আন্ডার-রাইটিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮টি। এর বিপরীতে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৩৯৪ জন এবং ইস্যু ম্যানেজমেন্ট ৬টি ও আন্ডার-রাইটিংয়ের সংখ্যা বেড়েছে ৫টি। অন্যদিকে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড সার্টিফিকেট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে বিক্রি হয়েছে ৯২ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত অর্থবছরে আইসিবির মার্জিন ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা ও ইকুইটি হিসেবে অর্থ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে মার্জিন ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৫৭৯ কোটি টাকা এবং ইকুইটি হিসেবে বিতরণ হয়েছে ২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৩৫০ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৬৪৬ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, বিভিন্ন খাতে ঋণ আদায়ের মধ্যে বকেয়া মার্জিন ঋণ খাতে এক হাজার ৩৬০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩২৬ কোটি টাকা, ৯৫ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৬ কোটি টাকা এবং ইকুইটি হিসেবে বিতরণকৃত অর্থ থেকে ৪৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৯ কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে সংস্থাটি।

আইসিবির মতে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুদ্রাবাজার থেকে পরিবর্তনশীল সুদহারে সংগৃহীত তহবিলের ওপর নির্ভরশীলতা এবং পর্যাপ্ত তহবিল প্রাপ্তির সীমাবদ্ধতা, স্বল্পমেয়াদে তহবিল সংগ্রহ করে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগের ফলে সংস্থার তহবিল ব্যয় ও সুদ ব্যয় বেড়ে যাওয়া, বিপুল পরিমাণ মার্জিন ঋণ অনাদায়ী থাকায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আলোকে আইসিবি যে সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি তা নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চলতি মাসেই এ নিয়ে আইসিবির সঙ্গে বৈঠক হবে।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯/হাসনাত/হাকিম মাহি/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়