ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রাজন-রাকিব হত্যা : আপিল শুনানি আর কত অপেক্ষা

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৬, ৮ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজন-রাকিব হত্যা : আপিল শুনানি আর কত অপেক্ষা

২০১৫ সাল। কাছাকাছি সময়ে সিলেটে শিশু রাজন ও খুলনায় শিশু রাকিবের নির্মম হত্যাকাণ্ড সারা দেশের মানুষকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠেছিল সে সময়।

সব শ্রেণির মানুষের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে সরকারও ওই দুই শিশু হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের সিদ্ধান্ত নেয়। মাত্র ১৭ কার্যদিবসে রাজন হত্যা মামলার বিচার শেষ করে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। হাইকোর্টও এই মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানি করে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।

অপরদিকে, শিশু রাকিব হত্যা মামলাতেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করে প্রধান দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। হাইকোর্ট এ মামলাতেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিচার করেন।

চাঞ্চল্যকর এই দুই মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পর আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো আসামিদের চূড়ান্ত আপিল শুনানি শুরু হয়নি। সর্বোচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামিদের সাজা কার্যকর করা যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর শিশু রাজন ও রাকিব হত্যা মামলায় আসামিদের আপিল কোন পর্যায়ে আছে তা আমি জানি না। ১৩ অক্টোবর কোর্ট খোলার পর খোঁজ নিয়ে বিষয়টি আপনাদের অবহিত করব।,

তবে আসামিদের পরিবার ও আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে হাইকোর্টের রায় প্রকাশের পরই রাজন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা আপিল করেছেন। অন্যদিকে রাকিব হত্যা মামলায় হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল করেছেন।

রাজন হত্যা মামলা : ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল সিলেটের চাঞ্চল্যকর শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া চার আসামির ফাঁসির বহাল রাখেন হাইকোর্ট। মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন- কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল আহমদ।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ মামলায় নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নূর মিয়ার দণ্ড কমিয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া, প্রধান আসামি কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহাম্মেদের সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। অপর আসামি দুলাল আহাম্মেদ ও আয়াজ আলীর এক বছরের সাজাও বহাল রাখেন আদালত।

২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর রাজন হত্যা মমালায় আসামি কামরুলসহ চারজনকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।

২০১৫ সালের ৮ জুলাই চুরির অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে। লাশ গুম করার সময় ধরা পড়ে একজন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করে।

রাকিব হত্যা মামলা : ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল  খুলনার আলোচিত শিশু রাকিব হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। মামলার প্রধান আসামি মো. শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুকে এ দণ্ড দেয়া হয়।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর শিশু রাকিব (১২) হত্যার দায়ে প্রধান আসামি মো. শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুকে ফাঁসির আদেশ দেন নিম্ন আদালত।

খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দেন আদালত।

২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটরস নামে এক মোটরসাইকেলের গ্যারেজে নির্যাতন করে রাকিবকে হত্যা করা হয়। পরের দিন রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে শরীফ, শরীফের সহযোগী মিন্টু খান ও মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। বহু আলোচিত এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলা হওয়ার ৯৬ দিন পর রায় ঘোষণা করা হয়।



ঢাকা/মেহেদী/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়