ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

শীতের পর বেড়েছে মশার উৎপাত

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শীতের পর বেড়েছে মশার উৎপাত

প্রতীকী ছবি

শীতের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে আবারো রাজধানীতে মশার উৎপাত বেড়েছে। এতে গত বছরের মতো ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মশক নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভূমিকা ও সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজধানীবাসী।

কীটতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, গত বছরের মতো এবারও রাজধানীতে মশার উৎপাত থাকবে। বিশেষ করে, ডেঙ্গু মশা নিধনে ধারাবাহিকভাবে কাজ না করলে এটি নির্মূল করা সম্ভব হবে না।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সালে শীত মৌসুম আসার পর মশা মারার ওষুধ স্প্রে এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযান থেমে যায়। মাঝেমধ্যে সিটি করপোরেশনের মশকনিধন কর্মীদের দেখা গেলেও শীতের শেষদিকে উপস্থিতি একেবারে শূন‌্যের পর্যায়ে ছিল। এবার গরম পড়ার পরও মশকনিধন কর্মীদের দেখা যায়নি।

দুই সিটি করপোরেশনের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ডেঙ্গু মশা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা করছেন তারা।

তবে বাস্তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে কয়েকটি অ‌্যাডভোকেসি সভা ছাড়া দুই সিটি করপোরেশনে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।

রাজধানীর উত্তরা, বনানী, মহাখালী, কচুক্ষেত, মিরপুর, মতিঝিল, ধানমন্ডি, সোবহানবাগ, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, বংশাল, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, শান্তিনগর, মুগদা, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে এসব এলাকায় মশার উৎপাত বেড়েই চলছে।

কচুক্ষেত এলাকার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, সন্ধ্যা নামলেই মশা জেঁকে বসে। বাসার জানালা বন্ধ করেও মশা আটকানো যায় না। অনেক সময় কয়েল জ্বালালেও মশা দূর হয় না।

তিনি বলেন, ‘মশা থেকে বাঁচার একটাই উপায়- সব সময় মশারির ভেতরে থাকা। কিন্তু এটা তো কোনোভাবেই সম্ভব না।’

শান্তিনগরের বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, ‘গত এক মাসে এলাকায় মশার ওষুধ ছিটাতে দেখিনি। নালা-নর্দমাও পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এ কারণে মনে হচ্ছে, মশার উৎপাত বেড়েছে। এবারও যদি গত বছরের মতো অবস্থা হয়, তাহলে তো কোনো উপায় থাকবে না।’

শনির আখড়ার তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মশার উৎপাতে ঘরের বাইরে থাকা দায়। এবারও আগে থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।’

সরেজমিনে কচুক্ষেত, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, শ্যামলীসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নালা-নর্দমা নোংরা  হয়ে আছে। এসব জায়গায় মশা ভন ভন করছে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, ডেঙ্গু নির্মূলে সারা বছর কাজ করতে হবে। গত বছর ডেঙ্গু হয়েছে, এ বছরও হবে, এসব চিন্তা করা যাবে না। দীর্ঘদিন ডেঙ্গু মশার বিরুদ্ধে কাজ করলে একটা স্থায়ী সমাধান আসতে পারে। সেজন্য পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে।

এদিকে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সূত্র বলছে, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম প্রায় থমকে ছিল। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়রের অবর্তমানে প্যানেল মেয়র থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন জানিয়েছেন, তারা গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবছর পুরোদমে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, আমরা এখন জানি, কোথায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে, কোথায় এদের ঘনত্ব বেশি, কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়? এসব বিষয় জানা থাকায় এবার আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে।


ঢাকা/নূর/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়