আম্ফান : আওয়ামী লীগের সর্বাত্মক প্রস্তুতি
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই আঘাত হানতে যাচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এ সময় সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় তাদের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। বুধবার সকাল ৬টায় মহাবিপদ সংকেত জারি করা হবে। মানুষের জানমাল রক্ষায় ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৫১ লাখ ৯০ হাজার লোক থাকতে পারবে। তবে সেখানে আমরা ২০ থেকে ২২ লাখ লোককে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতি থেকে লোকজনদের রক্ষায় ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আশ্রয় গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে আশ্রয়গ্রহণকারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সুবিধার্থে আশ্রয়কেন্দ্রে চিকিৎসক রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপকূলীয় জেলা-উপজেলাগুলোতে দলীয় নেতাদের সাধারণ মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে কেন্দ্র। অনেক সময় মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় আসতে চায় না। ঝড়ে ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনতে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে করোনা প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি স্মরণে রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করার বিষয়টিও বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী উপকূলীয় ১৭টি সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে সতর্ক থাকতে এবং মানুষের পাশে দাঁড়াতে নেত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়েছি।’
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসুর আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে এরইমধ্যে আমরা নেতাকর্মীদের সর্বাত্মকভাবে মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছি এবং কাজও শুরু করে দিয়েছি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্থানীয় প্রশাসন, রেড ক্রিসেন্ট, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি।’
সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমাদের জন্য একটু চ্যালেঞ্জিং হবে। এ নিয়ে প্রশাসনের প্রতিনিধিসহ আমরা মিটিং করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একই পরিবারের লোকজনকে আমরা একই জায়গায় একসাথে রাখব। অবশ্যই মাস্কের ব্যবস্থা করব। যাদের জ্বর, কাশির মতো উপসর্গ আছে তাদেরকে আমরা ভিন্ন জায়গায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রেখেছি যে, এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যেন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। বিশেষ করে, যারা উপকূলবাসী আছেন, তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য সরকারের পাশাপাশি কাজ করবে তারা।’
উপকূলীয় জেলার জনসাধারণকে সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার অনুরোধ জানিয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি এবং মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় সকল নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে যা যা করণীয় সবই করা হবে।’
ঢাকা/পারভেজ/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন