ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

করোনাভাইরাস দমনে যত ওষুধ ও ভ্যাকসিন

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ৩১ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনাভাইরাস দমনে যত ওষুধ ও ভ্যাকসিন

চীনের উহান প্রদেশে গত বছরের শেষের দিকে যে রহস্যময়ী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়, তার সংক্রমণে মরণব্যাধিটির নাম দেয়া হয়েছে কোভিড-১৯।

তবে শুরুতে আবিষ্কারের পর এর নাম দেয়া হয় ‘নভেল’। যেহেতু ২০১৯ সালে এটি আবিষ্কৃত হয়, তাই তাৎক্ষণিকভাবে বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির নাম দিয়েছিলেন ২০১৯-এনসিওভি। এর স্ট্যাটাস ‘নভেল’ ও গোত্রের নাম ‘সিওভি’ থেকে এই নাম দেয়া হয়। পরে ‘করোনা ভাইরাস ডিজিজ’ এর সংক্ষেপ ‘কোভিড’ ও আবিষ্কারের সাল ২০১৯ এর সমন্বয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগকে ‘কোভিড-১৯’ নাম দেয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই নামের স্বীকৃতি দেয়।

মারাত্মক এই রোগ এতোটাই ছোঁয়াচে যে, ধারণার বাইরে দ্রুত গতিতে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। কে, কখন, কিভাবে হবে এর পরবর্তী শিকার তা কেউ জানে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সব বিশেষজ্ঞরা বলছেন বার বার হাত ধোয়া ও প্রয়োজনে মাস্ক পরার কথা। তবে এই মারাত্মক ভাইরাসকে কাবু করার কোনো কার্যকর ওষুধ বা ভ্যাকসিন এই মুহূর্তে বাজারে নেই। অবশ্য দু’ একটি ওষুধের কথা বিবেচনা করছেন গবেষকরা। 

প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এপ্রিলে পরীক্ষামূলকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চীনের সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ভাইস প্রেসিডেন্ট জু ন্যানপিং। আর বিশ্বজুড়ে অনেক প্রতিষ্ঠানই জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ওষুধ ও ভ্যাকসিন আবিষ্কারের। সম্ভাব্য সেসব ওষুধের কথা জানি চলুন।

জরুরি প্রয়োজনে ক্লোরোকুইন: কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জরুরি প্রযোজনে অল্প পরিমাণে ক্লোরোকুইন ও হাইড্রোক্সি ক্লোরোকুইন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ দুই ওষুধের ব্যাপারে সম্মতি জানান এক বিবৃতিতে। ম্যালেরিয়া ও আথ্রাইটিসের চিকিৎসায় ওষুধ দুটি ব্যবহৃত হয়।

চীনে প্রথম অনুমোদন পাওয়া ওষুধ ফ্যাভিলেভির: চীনের দ্য ন্যাশনাল মেডিকেল প্রডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন করোনাভাইরাস দমনে প্রথম ওষুধ হিসেবে ফ্যাভিলেভিরকে অনুমোদন দেয়। ওষুধটি শেনঝেন শহরের একটি ক্লিনিকের ৭০ জন রোগীকে দেয়া হয়। এতে অনেকটাই ভালো ফল পাওয়া গেছে। 

পৃথিবীর বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস আরো যেসব ওষুধ ও ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে-

* কানাডার এন্তোস ফার্মাসিউটিক্যালস কোভিড-১৯ সারাতে ফুসোজেনিক্স ডিএনএ ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কাজ করছে। 

* অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির জেনার ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত সিএইচএডওএক্সওয়ান এন কোভ-১৯ নামের একটি ভ্যাকসিন নিয়ে শিগগিরই পরীক্ষা চালানো হবে। 

* সুইজারল্যান্ডের রয়ভান্ট সায়েন্সেস কোম্পানি জিমসিলুম্যাব নামের একটি এন্টিবডি তৈরির কাজ করছে, যা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু হার কমাতে সহায়তা করবে। 

* আমেরিকান কোম্পানি আলটিমিউন ইউনিভার্সিটি অব আলাবামার সাথে একজোট হয়ে অ্যাড কোভিড নামের একটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কাজ করছে। এটি হবে নাকে দেয়া সিঙ্গেল ডোজের একটি ভ্যাকসিন। 

* চীনের আই-ম্যাব বায়োফার্মা টিজেএমটু নামের একটি এন্টিবডি তৈরির কাজ করছে। 

* আমেরিকান কোম্পানি জিলিড সায়েন্সেস এর ওষুধ রেমডেসিভির করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সফলতা আনতে পারবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। 

* সুইজারল্যান্ডের রোচ কোম্পানির ওষুধ অ্যাকটেমরা করোনাভাইরাসের কারণে শরীরে যেসব জটিলতা তৈরি হয়, তা ঠেকাতে পারে। এমনটাই দাবি কোম্পানিটির। 

* ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট আমেরিকান কোম্পানি কোডাজেনিক্সের সাথে একজোট হয়ে করোনাভাইরাস রোধে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করছে, যা ২০২২ সালে বাজারে পাওয়া যাবে বলছে সেরাম ইনস্টিটিউট। 

এছাড়া বিশ্বের আরো কিছু কোম্পানি করোনাভাইরাসের ওষুধ ও ভ্যাকসিন তৈরিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

তথ্যসূত্র: ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস, এক্সপ্রেস 

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়