ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

করোনা: গণমাধ্যমকর্মীর স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার

ইবনুল কাইয়ুম সনি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২৪ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনা: গণমাধ্যমকর্মীর স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার

করোনা এমন এক মহামারি যা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।  মানুষের জীবন ও জীবিকাকে করেছে পর্যুদস্ত। কতদিন এ পরিস্থিতি চলমান থাকবে বলা যায় না।

প্রতিদিন করোনায় বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যুর মুখে পড়ছে। ইতোমধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে ছাড়িয়েছে হাজার। অচিন্তনীয় এই বিভীষিকা বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনযাপন ও অভ্যাস পরিবর্তন করে দিয়েছে। মানুষ এখন নতুনভাবে জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। অদৃশ্য এ শত্রুর সাথে লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং তাদের নির্দেশিত পথেই হাঁটতে হবে। না হলে মানবসভ্যতা হুমকীর মধ্যে পড়বে। হুমকীর মধ্যে পড়বে পেশাগত ক্ষেত্রও।

নতুন এই জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে আরও সময় দরকার। দরকার প্রস্তুতি। সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত এই তিন স্তরের মানুষের মধ্যে সমানভাবে এই অভ্যস্ততা তৈরি হওয়া দরকার। না হলে হুমকী থেকেই যাবে। এক শ্রেণি সচেতন হলো এবং বিধি মতো জীবনযাপন শুরু করলো- অন্য আরেকটি শ্রেণি তা করলো না বা অসচেতন থাকলো তাতে উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিটি মানুষকেই নিজ নিজ কর্মের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বেঁচে থাকতে হয় এবং পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে ভূমিকা রাখতে হয়। অর্থনৈতিক প্রবাহ যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে নিজনিজ অবস্থান থেকে পরিবার নিয়ে মানুষ টিকে থাকতে পারে। এই প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্বাভাবিক জীবন যাপনে ছন্দহীনতা আসে। দিশেহারা হয়ে পড়ে মানুষ। ঠিক যেমনটা হয়েছে করোনার এই ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে।

করোনার বিরুদ্ধে মানুষের এই লড়াইয়ের চিত্র দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর সামনে আয়নার মতো তুলে ধরতে গণমাধ্যমকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। দিনরাতের ব্যবধান ঘুঁচে গেছে তাদের। অতিরিক্ত কাজ করে চলেছেন তারা। কারণ, যখনই কিছু ঘটে- একজন প্রকৃত গণমাধ্যমকর্মী হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না। কোনো ঘটনা ঘটলে তার মনোজগতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত খবরটি তার প্রচারমাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন, ততক্ষণ তিনি দায়মুক্তি অনুভব করতে পারেন না। এই দায়িত্ব বোধের স্থান থেকে একজন সংবাদকর্মীকে কোভিড-১৯ এর ঝুঁকি নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। ঘটনা ঘটলে একজন রিপোর্টারকে ঘটনাস্থলে ছুটে যেতে হয়। রেডিও, সংবাদপত্র বা অনলাইন গণমাধ্যমের রিপোর্টার হলে একজন ঘটনাস্থলে গেলেই হয়। কিন্তু টেলিভিশন সংবাদকর্মী হলে অন্তত দুজনকে ছুটতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- জনসমাগম যত বেশি হবে সংক্রমণের ঝুঁকি তত বাড়বে। তাই ইচ্ছে থাকলেও একজন দায়িত্ববান সংবাদকর্মী বসে থাকতে পারেন না। জনসমাগমের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন তিনি। সংবাদ সংগ্রহ, সাধারণ জনগণের করণীয় সম্পর্কিত বার্তা, মানুষকে সতর্কীকরণ, কোথাও কোথাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার সংবাদ তুলে ধরতে ময়দান চষে বেড়াচ্ছে গণমাধ্যমকর্মীরা। তুলে আনছে সংবাদ। আয়নার মতো তুলে ধরছে গোটা বিশ্বের চেহারা। ঘটনা ও ঘটনার পিছনের কারণ।

এই দূরহ কাজটি করতে গিয়ে একজন গণমাধ্যমকর্মী কতটা নিরাপদ? কতটা সুরক্ষিত? কতটা রক্ষিত হচ্ছে তার মানবাধিকার? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাক। সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। চীন দেশের হুবেই প্রদেশের ঘটনা। বাংলাদেশে এ মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রথম সংবাদটি প্রকাশিত হয় ২০২০সালের 8 মার্চ। শুরুতে এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা, সরকারের মহামারি মোকাবেলায় প্রস্তুতি এবং বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসীদের আগমন ও তাদের গতিবিধি নিয়ে সংবাদের মধ্যেই মূলত গণমাধ্যমকর্মীদের বিচরণ ছিলো। শুরুতে একরকম অরক্ষিত অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। শুরুতে সংবাদকর্মীরা মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই ইত্যাদি নিজ দায়িত্বে সংগ্রহ করেছেন এবং ব্যবহার করে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। এতে তাদের ব্যক্তিগত খরচা বেড়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া শুরু করলে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের প্রধান তিনটি সংগঠন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তাদের সদস্য গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীসহ কয়েক দফায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এসব সংগঠনের তালিকাভুক্ত সংবাদকর্মীদের জন্য অর্থ সহায়তা দেওয়ারও অঙ্গীকার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তা পাবেন তারা। তবে যারা সদস্য নন, তারা এসব সহায়তার কোনোটাই পাবেন না। এছাড়া ঢাকা প্রেসক্লাবে সংবাদকর্মীদের জন্য করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যে কোনো সংবাদকর্মী চাইলে সেখানে বিনামূল্যে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের করোনা টেস্ট করাতে পারবেন।

তবে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সংবাদকর্মীদের জন্য কেন্দ্র থেকে এসব ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। এসব সংবাদকর্মীদের অনেকেরই পারিশ্রমিক খুবই কম। তাই শুরুতে উচ্চমূল্যের পিপিই তারা ব্যবহার করতে পারেননি। এক প্রকার অরক্ষতি থেকেই সংবাদ সংগ্রহ করেছেন তারা। পরবর্তীতে তারাও ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন। ।

পারিশ্রমিক কম হওয়াই এদের অনেকেই তাই বাধ্য হয়ে একাধিক গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত হন। অর্থাৎ মফস্বলের একজন টেলিভিশন সাংবাদিক চাইলে একটি রেডিও, একটি কাগজের পত্রিকা ও একটি অনলাইন গণমাধ্যমে সংবাদকর্মী হিসেবে যুক্ত থাকতে পারবেন। তবে তিনি একাধিক টিভি, রেডিও, কাগজের পত্রিকা বা অনলাইন গণমাধ্যমে কাজ করতে পারবেন না। করোনার ভয়াবহতা ঠিকমতো বুঝে ওঠার আগেই বাংলাদেশের গণমাধ্যমে একটি ছোটো ঝড় বয়ে গেছে। শুরুতেই আমরা কয়েকজন সহকর্মীকে হারিয়েছি। গণমাধ্যমকর্মী খোকন, আসলাম, রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে হারাতে হয়েছে সেই ঝড়ে। অনেক মফস্বল সংবাদকর্মী করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তাদের করোনা টেস্ট করা হয়নি। কেননা, তখনো ওইসব অঞ্চলে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। সম্প্রতি কিংবদন্তি সাংবাদিক কামাল লোহানি করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আবেদ খান আক্রান্ত হয়ে লড়ছেন।

দেশব্যাপী কমবেশি বহু গণমাধ্যমকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। সেরেও উঠেছেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান রাইজিংবিডি ডটকম গত ২৫ মার্চ থেকে কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এখনও আমরা নিজ নিজ বাসায় বসে কাজ করছি। এরকম বহু অনলাইন সংবাদমাধ্যমকর্মীরা বাসায় থেকে কাজ করছেন। তবুও অদৃশ্য এই শত্রুর দ্বারা যে কেউ, যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারেন। তাই নিজ নিজ সুরক্ষার দায়িত্ব অনেকটা নিজের উপরেও বর্তায়। কেউ যদি নিজের বাড়িতে থেকে করোনায় আক্রান্ত হন সে ক্ষেত্রে সে দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর বর্তায় না।

করোনা ছড়ানোর শুরুর দিকে কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ায় বাংলাদেশের একটি ইলেকট্রনিক ভিজ্যুয়াল মিডিয়া কয়েকদিন সংবাদ প্রচার বন্ধ রাখে। তাদের পুরো টিমকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় সেসময়। কর্মীরা সুস্থ হয়ে ওঠায় পুনরায় তারা নিজেদের কার্যক্রম শুরু করেছে। কথা বলে জানা গেছে, তারাও এখন দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করছে। তাদের ধারণা, দেহে এন্টিবডি তৈরি হওয়ায় এখন তারা নিরাপদ।

দেশে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান কর্মীদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে। কেউ কেউ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছে। তবে মূল ধারার বাইরে অনেক গণমাধ্যম আছে যারা এই ভয়বহ পরিস্থির মধ্যেও কর্মী ছাটাই করেছে। খবরের কাগজের আকার ছোটো করেছে। ১৬ পাতার পত্রিকা ১২ পাতা এবং ১২ পাতার পত্রিকা ৮ পাতা করেছে। কেউ কেউ কর্মীদের বেতন অর্ধেক করে দিয়েছে। কেউ কেউ উৎসব ভাতাও দেয়নি। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তাই এটি পুরো দেশের গণমাধ্যমের দায়-এর মধ্যে পড়ে না।

প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার বাইরে সংবাদকর্মীদের কিছু অন্য বাঁধা আছে। যেমন- প্রতিদিন সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কতজন কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন, কতজন সুস্থ হয়েছেন, কতজন মারা গেছেন সে সম্পর্কে অনলাইনে প্রেস ব্রিফ করা হচ্ছে। শুরুতে সীমিত পরিসরে সেখানে গণমাধ্যম কর্মীরা থাকতে পারতেন। কিছু প্রশ্নও করতে পারতেন। তবে করোনা ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়লে এখন শুধু অনলাইনেই ব্রিফ করা হচ্ছে। সেখানে কারও কোনো প্রশ্ন থাকলে জেনে নেওয়ার উপায় নেই। করোনার ভয়ে দেশব্যাপী হাসপাতালগুলোয় রোগী ভর্তি ও অন্য রোগের চিকিৎসা প্রায় বন্ধ। সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া, হাসপাতালে ভর্তি হতে না পারা বা ভর্তি না করা এসব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিদিনই ঘটছে। এসব সংবাদ তুলে আনছেন সংবাদকর্মীরা। অনেক সময় ব্যক্তিগত সুরক্ষা না থাকার কারণে তারা হাসপাতালে যেতে পারছেন না। টেলিফোন করে তথ্য নিতে হচ্ছে। তাতে অনেকসময় সঠিক চিত্র উঠে আসছে না। বেসরকারি যেসব হাসপাতালে কোভিড টেস্ট হচ্ছে, সেখানে সরকার ৩৫০০ টাকা টেস্ট রেট নির্ধারণ করে দিলেও আদায় করা হচ্ছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। ফলে নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার অধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা নিয়ে ব্যপকভাবে লেখালেখি হলেও কর্তৃপক্ষ উদাসিন। হয়তো আরও একটু সময় লাগবে এসব অন্তরায় দূর হতে।

করোনায় সামনের সারির যোদ্ধারা হলেন সংশ্লিষ্ট দেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের সুরক্ষা সবার আগে নিশ্চিত করা দরকার। বাংলাদেশে চিকিৎসকদের মধ্যে মাস্কসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণের সরকারী টেণ্ডার নেয় একটি কোম্পানি। তবে সততার অভাব থাকায় নিম্নমানের সামগ্রী বিতরণ করে তারা। এতে প্রায় তিনশ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এসব নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা রিপোর্ট করতে গেলে ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছিলো।

তবে তাতে থেমে থাকেনি গণমাধ্যমকর্মীরা। তাদের ক্রমাগত লেখালেখির কারণে বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। পরবর্তীতে দোষীদের জরিমানা করা হয় এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকসহ প্রতিটি স্বাস্থ্যকর্মীকে করোনায় আক্রান্ত হলে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
দেশে অবাধ সাংবাদ প্রকাশের সবচেয়ে বড় অন্তরায় বিদ্যমান ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’। এর অপব্যবহারে গণমাধ্যমকর্মীরা হেনস্তা হতে পারেন। জেল-জরিমানার শিকার হতে পারেন। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় এ বিষয়ে খুব বেশি কথা বলার নেই। তবে এ প্রসঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান জার্মান সংবাদসংস্থা ডয়েচে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘৩২ ধারায় যেসব অপরাধ, বিশেষ করে গুপ্তচর বৃত্তির যে বিষয়টি আনা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে এই অপরাধের আওতা ও শাস্তির বিধান আছে। তাই ডিজিটাল আইনে এটি নিয়ে আসা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে মানুষ হয়রানির শিকার হবে।’

গণমাধ্যমকর্মী কোনো দ্বীপের একক বাসিন্দা নয়। তার স্বাস্থ্য সুরক্ষার অধিকার, জীবন ধারণের অধিকার, কাজের অধিকার এবং মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। এইসবই তার গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার। যা একইভাবে মানবাধিকারও। তাই করোনাকালে সংবাদ সংগ্রহে, পরিবেশনে ও প্রকাশে একজন সংবাদকর্মীর নিজের সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রকেও এগিয়ে আসতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচারে তাই বাংলাদেশে গণমাধ্যমকর্মীদের মানবাধিকার কিছুটা লঙ্ঘিত হলেও পাশাপাশি ক্ষতিপূরণে যথেষ্ট আন্তরিতার সাথে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সরকার। তা গণমাধ্যমকর্মীদের তিনটি সংগঠনের মাধ্যমে সরকারী অর্থ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়েছে। তবে মূল ধারার গণমাধ্যমের পাশাপাশি অন্য মাধ্যমের কর্মীদেরও সঠিক নজরদারীর মাধ্যমে বেতন-ভাতাদি নিশ্চিত করা দরকার। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এসব কর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। পরিবার নিয়ে চরম অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়বেন তারা। তাই তাদেরকেও প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারী অর্থ সহায়তার আওতায় আনা জরুরি। মহান এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে এবং কার্যকরী করে গড়ে তুলতে সহনশীলতার পাশাপাশি আরও একটু সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন।

লেখক: সাংবাদিক



ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়