রোহিতের মাঠে ইতিহাসের হাতছানি বাংলাদেশের
নাগপুর থেকে ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ড্যানিয়েল ভেট্টরি বেশ জেদী মানুষ। আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে নিয়ে যাবেন সেন্টার উইকেটে। অথচ উইকেটের চারপাশ রশি দিয়ে ঘেরা! বাধ্য হয়ে রশি টপকে শিষ্যকে নিয়ে ঢুকে পড়েন উইকেটে। যে উইকেটে ভেট্টরি বিপ্লবকে নিয়ে অনুশীলন করেছেন তার থেকে তিন উইকেট পর ম্যাচ উইকেট। যেখানে আজ শিরোপা যুদ্ধে নামবে বাংলাদেশ ও ভারত। নাগপুরে দুই দলের ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায়।
দিল্লির মাঠটা ছিল বিরাট কোহলির। নাগপুরের মাঠ রোহিত শর্মার। বিরাটের মাঠে জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আজ কী তাহলে রোহিতের মাঠে জয় দিয়ে শেষ করবে বাংলাদেশ? উত্তর জানা যাবে রাতেই। প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ এখন ভারতে। সফরের প্রথম ম্যাচেই জয় বাংলাদেশের। পরের ম্যাচে হোঁচট। এবার সিরিজের শেষ ম্যাচ।
সিরিজ জিতলেই ইতিহাসের হাতছানি বাংলাদেশের। এশিয়ার কোনো দলের বিপক্ষে এখনও ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি ভারত। বাংলাদেশের সেই সুযোগটি আছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার রেকর্ড খুব বেশি নেই বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে চলতি সিরিজের আগে এই ধরনের তিনটি সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। যার দুটিতে জিতেছে, হেরেছে একটি।
২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ওই একই বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এবার ভারতের বিপক্ষে কী করবে বাংলাদেশ? সিরিজে বিরাজ করছে ১-১ এর সমতা। নাগপুরেই আজ পাওয়া যাবে সব প্রশ্নের উত্তর।
বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বিশ্বাস করেন তার ছেলেদের ভারতকে আরেকবার হারানোর সামর্থ্য রয়েছে। তবে পুরোনো ভুলগুলো কোনোভাবেই ফেরাতে চান না বাংলাদেশের কোচ। বিশেষ করে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের থেকে বড় ইনিংসের অপেক্ষায় তিনি।
‘মুশফিকুর রহিম প্রথম ম্যাচে বড় ইনিংস খেলেছে, আমরা জিতলাম। রোহিত দ্বিতীয় ম্যাচে বড় ইনিংস খেলল, ভারত জিতল। তৃতীয় ম্যাচে ম্যাচ জিততে হলে আমাদের এমন কাউকে লাগবে যে আমাদের হয়ে ৭০-৮০ রান তুলবে। আমরা ত্রিশের ঘরে ভালোভাবে পৌঁছে যাচ্ছি। এরপরই পথ ভুলছি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা খারাপ সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। যেগুলো আমাদের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমি ছেলেদের থেকে এই জায়গায় উন্নতি চাচ্ছি।’ – বলেছেন ডমিঙ্গো।
ছেলেদের উপর আস্থা রেখে ডমিঙ্গো বলেছেন,‘এক সপ্তাহ আগেও কেউ বিশ্বাস করতো না যদি আমি বলতাম আমরা ভারতকে হারাব বা অন্য কিছু। কিন্তু দিল্লির জয়টি আমাদের ভাবনা পাল্টেছে। এখন আমাদের নিজেদের মনোবল ও বিশ্বাসও বেড়েছে। সেই আস্থা তৈরি করেছেন ক্রিকেটাররা। তাহলে আরেকটি জয়ের জন্য কেন আমরা তাদের উপর ভরসা রাখতে পারব না।’
গত কয়েক বছরে ভারতের বিপক্ষে বেশ কিছু ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। এর একটিতেও নেই কোনো সুখস্মৃতি। এবার নাগপুরের ম্যাচটিও হয়ে গেছে অলিখিত ফাইনাল। এবার কি শেষ হাসিটা হাসবে বাংলাদেশ? যদি হাসতে পারে তাহলে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের নাম। সেই অপেক্ষাতেই আছেন ক্রিকেটপ্রেমিরা।
নাগপুর/ইয়াসিন/আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন